![]() |
Picture source: pressbooks.ccconline.org |
প্যানক্রিয়াসের পাথর কি?
অগ্ন্যাশয়ের পাথর যা প্যানক্রিয়াটিক ক্যালকুলাস (Pancreatic Calculus) বা প্যানক্রিয়াটোলিথ (Pancreatolith) নামেও পরিচিত। এটি অগ্ন্যাশয়ের মধ্যে খনিজ, প্রোটিন এবং অন্যান্য পদার্থের শক্ত আস্তরণ জমা হওয়ার ফলে হয়ে থাকে। ধীরে ধীরে এই পাথরের আকারে পরিবর্তিন হতে দেখা যায়।
অগ্ন্যাশয় পাথরের কারণ কি ?
অগ্ন্যাশয়ের পাথর বিভিন্ন কারণে ঘটতে পারে, যার মধ্যে রয়েছে :
প্যানক্রিয়াটাইটিস: অগ্ন্যাশয়ের পাথরের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল দীর্ঘস্থায়ী প্যানক্রিয়াটাইটিস। এটি অগ্ন্যাশয়ের একটি প্রদাহ যা বেশী মাত্রায় অ্যালকোহল সেবন বা জেনেটিক কারণগুলির দ্বারা উদ্ভূত হতে পারে। সময়ের সাথে সাথে, এই প্রদাহ পাথর গঠনের দিকে নিয়ে যায়।
অগ্ন্যাশয়ের স্ট্রিকচার: অগ্ন্যাশয়ের নালীতে সংকীর্ণতা থাকলে হজমকারী এনজাইম এবং অগ্ন্যাশয়ের রসের প্রবাহকে ধীর করে দিয়ে পাথরের সৃষ্টি করতে পারে।
বিপাকীয় রোগ : হাইপারপ্যারাথাইরয়েডিজম বা হাইপারক্যালসেমিয়ার মতো কিছু বিপাকীয় রোগের কারণে রক্তে ক্যালসিয়ামের উচ্চ মাত্রার সৃষ্টি হয়, ফলে অগ্ন্যাশয়ে পাথর হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
অগ্ন্যাশয় পাথরের লক্ষণ
অগ্ন্যাশয় পাথরের লক্ষণগুলি নিম্নরুপঃ
পেটে তীব্র ব্যথা: অগ্ন্যাশয়ের পাথর হয়েছে এমন ব্যক্তিরা প্রায়শই পেটে তীব্র ব্যথা অনুভব করে থাকেন। যেটি পিঠের দিকে থেকে শুরু হতে পারে। এই ব্যথা তীক্ষ্ণ বা নিস্তেজ হতে পারে এবং সাধারণত খাওয়ার পরে আরও বেড়ে যেতে পারে।
হজমের সমস্যা: পাথর হলে অগ্ন্যাশয়ের স্বাভাবিক কার্যকারিতা ব্যাহত হতে পারে। যার ফলে হজমের সমস্যা যেমন ডায়রিয়া, পুষ্টির অভাব এবং ওজন হ্রাসের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
জন্ডিস: কিছু ক্ষেত্রে, অগ্ন্যাশয়ের পাথর পিত্ত নালীকে অবরুদ্ধ করে জন্ডিস সৃষ্টি করে থাকে। ফলে ত্বক ও চোখ হলুদ বর্ণের হয়, সাথে গাঢ় প্রস্রাব এবং ফ্যাকাশে মল হতে পারে।
অগ্ন্যাশয় পাথর নির্ণয় হয় কিভাবে?
বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে প্যানক্রিয়াসের পাথর নির্ণয় করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে:
ইমেজিং স্টাডিজ: সিটি স্ক্যান, এমআরআই এবং এন্ডোস্কোপিক আল্ট্রাসাউন্ড (ইইউএস) অগ্ন্যাশয়ের বিশদ চিত্র প্রদান করতে পারে, যা পাথরের উপস্থিতি সনাক্ত করতে সহায়তা করে।
রক্ত পরীক্ষা: রক্ত পরীক্ষা নির্দিষ্ট এনজাইমের উচ্চ মাত্রা সনাক্ত করতে পারে, যা অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহের কারণ নির্ণয় করতে পারে।
প্যানক্রিয়াসের পাথরের চিকিৎসা
অগ্ন্যাশয়ের পাথরের চিকিত্সা নির্ভর করে তাদের আকার, অবস্থান এবং লক্ষণগুলির উপর। চিকিত্সার মধ্যে রয়েছে:
ওষুধ : কিছু নির্দিষ্ট ওষুধ অগ্ন্যাশয় পাথরের ব্যথা উপশম করতে সাহায্য করতে পারে।
খাদ্য পরিবর্তন: কম চর্বিযুক্ত খাবার এবং অ্যালকোহল এড়ানো কিছু ক্ষেত্রে এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে পারে।
অস্ত্রোপচার: গুরুতর ক্ষেত্রে, পাথর অপসারণ করতে এবং অগ্ন্যাশয় বা পার্শ্ববর্তী নালীগুলির যে কোনও কাঠামোগত সমস্যা সমাধানের জন্য অস্ত্রোপচারের (ERCP) প্রয়োজন হতে পারে।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় :
এন্ডোস্কোপির প্রয়োজনীয়তা, খরচ, সময় ও অন্যান্য বিষয়ে জানুন
মাথার সিটি স্ক্যান এর প্রয়োজনীয়তা
লিভার ফাংশন টেস্ট এর প্রয়োজনীয়তা, খরচ এবং অন্যান্য বিষয়
সিটি স্ক্যান এবং এমআরআই এর পার্থক্য
পি ই টি স্ক্যান করার প্রয়োজন, পদ্ধতি, খরচ, সময় এবং অন্যান্য
যদি আজকের আলোচনা থেকে আপনার কিছুমাত্র উপকার হয় তবে অবশ্যই প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমরা এখন ইউটিউবে আছি, সার্চ করুন SACHETAN JIBAN
বি: দ্রঃ এই লেখাটি কেবল সাস্থ্য সুরক্ষা ও সচেততামূলক তথ্য সরবরাহ করে মাত্র। এটি কোনওভাবেই যোগ্য চিকিৎসার মতামতের বিকল্প নয়। আরও তথ্যের জন্য সর্বদা বিশেষজ্ঞ বা আপনার নিজস্ব চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।
0 মন্তব্যসমূহ