রক্ত গ্রহণের সময় ...
রক্ত গ্রহণের সময় বা দানের সময় যদি গ্রূপ না মেলে। অথবা গ্রূপ না মিলিয়ে যদি রক্ত দেওয়া হয়, তবে শরীরে কী ধরনের প্রতিক্রিয়া হবে? ভালো নাকি খারাপ? খারাপ যদি হয় সেটা কতটা খারাপ? কেন প্রয়োজন এই গ্রূপ মেলানোর?
আর এমনটা হলে যে কোন গ্রূপের রক্ত অন্য যে কোন গ্রূপকে দিয়ে দেওয়া যেতো। তবে পৃথিবীতে আর রক্তের অভাব হতো না। তাহলে আন্দাজ করতেই পারছেন যে রক্তের গ্রূপ নির্ধারণ করা এবং নির্দিষ্ট গ্রূপের রক্ত নির্দিষ্ট গ্রূপের কেই দেওয়া একান্ত প্রয়োজন। তবে চলুন জেনে নেওয়ার চেষ্টা করি, ভিন্ন গ্রূপের রক্ত শরীরে প্রবেশ করলে কি কি ধরনের জটিলতা আসতে পারে।
রক্তের গ্রূপ কি?
গ্রূপ হল নির্দিষ্ট কিছু শ্রেণীতে রক্তকে বিভক্ত করা। এটা হলো বিভিন্ন উপাদানের উপর ভিত্তি করে রক্তের নির্দিষ্ট তালিকার একটি সমন্বয়। আর এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে অ্যান্টিজেনের উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতির উপর।
গ্রূপের প্রয়োজন কি?
মূলত ৮ টি (ক্লিনিক্যালি প্রুভেন) রক্ত গ্রূপ মানুষের মধ্যে পাওয়া যায়। রক্ত দেওয়ার সময় রোগীকে সঠিক রক্ত দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর অর্থ হ'ল রক্তদানের পর যেন কোনো রকমের পার্শপ্রতিক্রিয়া এমনকি জীবনহানির মতো সমস্যা না দেখা দেয়। কোনও বিপর্যয়কর পরিণতি এড়াতে দাতার রক্ত রোগীর রক্তের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় :
এন্ডোস্কোপির প্রয়োজনীয়তা, খরচ, সময় ও অন্যান্য বিষয়ে জানুন
মাথার সিটি স্ক্যান এর প্রয়োজনীয়তা
লিভার ফাংশন টেস্ট এর প্রয়োজনীয়তা, খরচ এবং অন্যান্য বিষয়
সিটি স্ক্যান এবং এমআরআই এর পার্থক্য
পি ই টি স্ক্যান করার প্রয়োজন, পদ্ধতি, খরচ, সময় এবং অন্যান্য
যদি এ গ্রূপের রক্ত বি গ্রূপে মেশে
একটি উদাহরণ দিয়ে বলা যায়, যদি রোগীর রক্তের গ্রূপ বি হয়, তাদের রক্তরসে স্বাভাবিকভাবেই অ্যান্টি-এ অ্যান্টিবডি থাকে। যদি এই (বি গ্রূপ) রোগী এ গ্রূপের রক্ত গ্রহণ করে, তবে প্রাপকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাটি সঙ্গে সঙ্গে সনাক্ত করতে পারে নতুন রক্তকণিকা এবং তাদের ধ্বংস করার চেষ্টা করে।।
একইভাবে, এ গ্রূপের রোগীর স্বাভাবিকভাবে রক্তরসে অ্যান্টি-বি অ্যান্টিবডি থাকে। যদি এই (এ গ্রূপ) রোগী গ্রূপ বি এর রক্ত গ্রহণ করে তবে রোগীর প্লাজমায় থাকা অ্যান্টি-বি অ্যান্টিবডিগুলি একইভাবে রক্ত গ্রূপ বি এর কোষগুলিকে সনাক্ত করতে পারে এবং তাদের ধ্বংস করার চেষ্টা করে।
অল্প পরিমাণে রক্ত কিডনি ছাঁকতে পারে। তবে বেশি মাত্রায় প্রবেশ করলে কিডনিতে কর্মক্ষমতা হারাতে পারে আর মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
একটি সঠিক গ্রাফ
গ্রহীতা দাতা
A- A-, O-
B+ B+, B-, O+, O-
B- B-, O-
AB+ সমস্ত গ্রূপের রক্ত দেওয়া যায়
AB- AB-,A-,B-,O-
O+ O+,O-
O- O-
ব্যতিক্রম
রক্ত দানের সময় এই নিয়মের ব্যতিক্রমও দেখা যায়, যেমন ও (নেগেটিভ) গ্রূপের রক্ত (যাতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে প্লাজমা থাকে না এবং প্রাকৃতিকভাবে অ্যান্টিবডিগুলির কোনও উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি নেই) অন্য যে কোনও রক্তের গ্রূপকে নিরাপদে দেওয়া যেতে পারে।
অপরদিকে এবি (পজিটিভ) গ্রূপের গ্রহীতারা সমস্ত গ্রূপের রক্ত গ্রহণ করতে পারেন। কারণ এই গ্রূপের রক্ত উপাদানগুলি বিভিন্ন গ্রূপ থেকে আসা রক্তের উপাদান কে গ্রহণ করতে পারে। তাই কোনো শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি হয় না।
পৃথিবীর বিরল রক্তের গ্রূপ
এবি নেগেটিভ গ্রূপ পৃথিবীতে সবথেকে কম পাওয়া যায়। প্রায় ০.৬ থেকে ১ শতাংশ মানুষের মধ্যে এই এবি নেগেটিভ রক্তের গ্রূপ টি বিদ্যমান।
সবথেকে বেশি প্রাপ্ত গ্রূপের রক্ত
ও পজেটিভ (O positive) রক্তের গ্রূপ সারা পৃথিবীতে বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে পাওয়া যায়। পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় ৩৫ শতাংশ মানুষের মধ্যে পাওয়া যায়।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় :
রক্ত পজিটিভ ও নেগেটিভ কিভাবে হয়?
আরএইচ ফ্যাক্টর একটি প্রোটিন। এই প্রোটিন প্রতিটি গ্রূপের মধ্যে উপস্থিত (+) থাকতেও পারে আবার নাও (-) থাকতে পারে। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই যে গ্রূপের রক্তে এটি আছে সেটি হয়ে গেল পজেটিভ। আর যে গ্রূপের রক্তে নেই সেটি হলো নেগেটিভ।
0 মন্তব্যসমূহ