H2

Sponsors

কোন কিছুর প্রতি আসক্তি জন্মানো বা চলে যাওয়ার পেছনে কি ডোপামিন দায়ী?

কোন_কিছুর_প্রতি_আসক্তি_জন্মানোর_কারণ_কি


কোন কিছুর প্রতি আসক্তি জন্মায় কেনো?


কখনো মনে প্রশ্ন হয়েছে, কেন কেউ কোন অ্যাডিকশন থেকে সম্পূর্ণভাবে বেরিয়ে আসতে পারে না। যখন সে জানে যে সেই বস্তুটি তার জীবনের চরম ক্ষতি নিয়ে আসছে। তারপরও কেন সেই বিষয়ে তার কেন কোনো আপত্তি জন্মায় না।

যেমন একটি বাচ্চার সামনে যদি দুটো চয়েস দেওয়া হয়, একটিতে থাকবে পড়াশোনা আর অন্যটিতে থাকবে ভিডিও গেম। তাহলে সে কোনটা চয়েস করবে? অবশ্যই দ্বিতীয়টি। তার মানে এটা ভেবে নেওয়া যাবেনা যে এই সমস্যাটা শুধু বাচ্চাদের। এটা কিন্তু সব বয়সেই হয়ে থাকে।

তাহলে এই যে আমরা স্বভাবসিদ্ধ একটা কাজ করছি। অর্থাৎ জেনে-বুঝেও আমরা আমাদের অ্যাডিকশন বা আসক্তিকে কোনভাবেই কন্ট্রোল করতে পারছি না। আর যেটা জীবনের জন্য ক্ষতিকারক, সেটাকেই আমরা বেছে নিচ্ছি। তবে কেন করছি। এটার পেছনে কী কারণ আছে বা কে এটাকে কন্ট্রোল করছে?

আসলে এটিকে কন্ট্রোল করার সবচেয়ে বড় বস্তুটি হল একটি নিউরোট্রান্সমিটার। এটির নাম ডোপামিন। যা আমাদের মস্তিষ্কে রয়েছে এবং এটিই আমাদের যেকোন আসক্তির পেছনে কারণ। যার এটার প্রভাব যত বেশি হবে, সে ততো বেশি আসত্তি প্রকাশ করবে তার পছন্দের বিষয় বস্তুর উপর।

যেমন, একজন প্রতিনিয়ত মদ পান করেন। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে তিনি মদ ছাড়া কিছুই কল্পনা করতে পারেন না। সে তিনি যতই জানুন যে এটাই তার জীবন ধ্বংস করে দেবে। তবুও কোনভাবেই তার অন্ধকার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা করতে পারবে না। এটাই হলো ডোপামিনের প্রভাব। 

ঠিক তেমনি ভিডিও গেম টা অনেক বেশি সুবিধার বা আনন্দের। আর পড়াশোনা বা হোমটাস্ক খুব বিরক্তিকর। কিন্ত ভবিষ্যতে পড়াশোনা ছাড়া যে ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হবে না, সে কথা জানা থাকলেও, সে সময়ে তার খুব একটা গুরুত্ব থাকবে না। 

তাহলে বুঝতেই পারছেন যে ডোপামিন আমাদেরকে এমন ভাবে কব্জা করে ফেলেছে, যে আমরা কিছুতেই কোন তৈরি হওয়া আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসতে পারি না।





ডোপামিন কি?


ডোপামিন মস্তিষ্কে তৈরি হয় যা একটি নিউরোট্রান্সমিটারের কাজ করে থাকে। মূলত, এটি নিউরনের মধ্যে রাসায়নিক ম্যাসেঞ্জার হিসাবে কাজ করে।

যখন আপনার মস্তিষ্ক কোনও পুরষ্কার বা ভালো কিছুর প্রত্যাশা করে, তখন ডোপামিন প্রকাশিত হয়। অর্থাৎ আপনি যখন কোনও নির্দিষ্ট কাজে আনন্দের সাথে সংযুক্ত থাকেন, তখনই ডোপামিনের প্রাধান্য বাড়তে থাকে শরীরে। এটা যে কোন কাজ বা বিষয় হতে পারে। যেমন নির্দিষ্ট কোনো খাবার, শপিং বা আপনার উপভোগ্য অন্য যা কিছু হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, ধরুন আপনার বিরিয়ানি খেতে খুব ভালো লাগে। এবার যদি সামনে সেটা তৈরি করা দেখেন এবং আর কিছুক্ষণের পরেই আপনি সেটার প্লেটটা হাতে ধরবেন এবং আনন্দের সাথে মুখে তুলে নেবেন। এটা মাথায় চলতে চলতেই ডোপামিনের প্লাবন বয়ে যায়।

মস্তিষ্কে সুখের একটি আবহ তৈরি হয়। তখন এক অনাবিল সুখানুভূতি বিরিয়ানির প্রতি আরো বেশি করে আসত্তি তৈরি করে এবং ভবিষ্যতে আরো বেশি করে এই খাদ্যবস্তুর প্রতি নজর ফিরিয়ে নিয়ে যায়।

মনে রাখবেন যে ডোপামিন একা এই কাজ করে না। সাথে অন্যান্য নিউরোট্রান্সমিটার এবং হরমোনগুলির ভূমিকা আছে, যেমন সেরোটোনিন এবং অ্যাড্রেনালিন ।

ডোপামিনের প্রভাব কমলে কি হবে?


যদি শরীরে কম ডোপামিনের প্রভাব দেখা দেয়, তবে
যেকোনো কিছুতে আপনার ইচ্ছা কমতে থাকবে।
সতর্কতা হ্রাস পায়।
মনোযোগ থাকবে না।
কম অনুপ্রেরণা এবং উত্সাহ সৃষ্টি হওয়া।
সমন্বয়ের অভাব হবে।

ডোপামিনের প্রভাব বেশী থাকলে কি হবে?


যে কোন কিছু নিয়ে আপনার ভাবনা চিন্তা মাত্রাতিরিক্ত হতে পারে অর্থাৎ অতিরিক্ত ভাবনাচিন্তা গ্রাস করতে পারে আপনাকে।
আর অতিরিক্ত ভাবনা চিন্তার জন্য আপনার বিভ্রান্তির সৃষ্টি হতে পারে। এছাডাও আপনি আক্রমণাত্মক এবং অতিরিক্ত প্রতিযোগিতামূলক হয়ে যেতে পারেন।




ডোপামিন কে বাড়ানোর কৌশল


যদি আপনার ডোপামিনের প্রভাব কম থাকে শরীরে তবে অবশ্যই প্রতিদিন এক্সারসাইজ করুন, যথেষ্ট মাত্রায় প্রোটিন খান, প্রোবায়োটিক খাদ্যগুলো খান, নিয়ম করে গান শুনুন, শরীরে পর্যাপ্ত সূর্যের রোদ লাগান ও পর্যাপ্ত ঘুমান।

ডোপামিন কখন ভালো, কখন নয়?


এটি তখনই ভালো যখন কোনো আসক্তি আপনাকে জীবনে উন্নতি ও অগ্রগতির দিকে নিয়ে যায়। যেমন কোন বিজনেস সেটআপ করা, চাকরি বা কোন প্রফেশনে যুক্ত হওয়া, সামাজিক কোনো ভালো কাজ করা বা জীবনের উন্নতির জন্য যেকোনো ধরনের কাজে উৎসাহ আসাটাই ডোপামিনের ভালো দিক। আর এর ঠিক উল্টো দিকে অগ্রসর হওয়া, অর্থাৎ কোনো বাজে নেশার প্রতি আসক্তি তৈরি হওয়া, যেটা জীবনকে তিলে তিলে শেষ করতে থাকে। তাই হল এর খারাপ দিক।

শেষ কথা


অতিরিক্ত বা একদম কম প্রভাব কোনটাই জীবনের জন্য ভালো নয়। সেটা যে কোনো বিষয়ই হোক না কেনো। তাই অতিরিক্ত আসক্তি যেমন ভালো নয়। তেমনি ইচ্ছাটা চলে যাওয়া উচিৎ নয়।

তাই একটা ব্যালেন্স সিচুয়েশন তৈরি করা জীবনের জন্য খুবই প্রয়োজন। একটা সঠিক রুটিন ফলো করা, উপযুক্ত ডায়েট ফলো করা, পর্যাপ্ত পরিমাণে এক্সারসাইজ এবং জীবনের সঠিক পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য যা যা প্রয়োজন সবকিছু করার মাধ্যমেই আমরা ডোপামিন কে ব্যালেন্স করতে পারি এবং জীবনে প্রগতি আনতে পারি।

যদি আজকের আলোচনা থেকে আপনার কিছুমাত্র উপকার হয় তবে অবশ্যই প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমরা এখন ইউটিউবে আছি, সার্চ করুন SACHETAN JIBAN
 
এছাড়াও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতেও সচেতন জীবনকে পেয়ে যাবেন আপনার সুস্বাস্থ্য ও সচেতনতার প্রয়োজনে।

কিছু সাস্থ্যকর ও ভালো মানের প্রোডাক্ট আপনার অপেক্ষায় , এখানে ক্লিক করে দেখে নিন


বি: দ্রঃ এই লেখাটি কেবল সাস্থ্য সুরক্ষার তথ্য সরবরাহ করে মাত্র। এটি কোনওভাবেই যোগ্য চিকিৎসার মতামতের বিকল্প নয়। আরও তথ্যের জন্য সর্বদা বিশেষজ্ঞ বা আপনার নিজস্ব চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

H2