H2

শরীরের এই লক্ষণগুলি জেনে আগে ভাগেই বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পান

শরীরের-এই-লক্ষণগুলি-জেনে-রাখুন


শরীরের এই লক্ষণগুলি ...


শরীরের এই লক্ষণগুলি অনেক কিছুই বলে, যদি আমরা ঠিক করে শুনতে চেষ্টা করি তবে।আমরা শরীরের জন্য কত কিছুই করি, কত কিছুই ভাবি আর কত কিছুই এক্সট্রা ভিটামিন, প্রোটিন বা মিনারেল নেওয়ার জন্য বাজার থেকে বিভিন্ন রকমের ঔষধ বা বিভিন্ন রকমের মাল্টিভিটামিন খেতে থাকি।

অথচ আমাদের শরীরের সঠিক কোন জিনিসগুলো প্রয়োজন, সেগুলো জানতে পারলে এত কিছুর প্রয়োজনই হবে না। যখনই আমাদের শরীর সমস্যায় পড়ে তখন কিছু না কিছু লক্ষণ দেখা যেতে থাকে। সেগুলো আমাদের শুধু বুঝে নিতে হবে সঠিক সময়ে।

তাহলেই উপযুক্ত এবং প্রয়োজনীয় উপাদান আমরা গ্রহণ করতে পারব এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে পারব। আজকে সেই সমস্ত লক্ষণ সম্পর্কে জানার চেষ্টা করব এবং কি করলে সেই সমস্যা থেকে বেরোনো যায় সেগুলো জানবো। 


ক্যালসিয়াম (Calcium) ঘাটতির লক্ষণ


যদি আপনি নিজে থেকেই হাতের বা পায়ের আঙ্গুল ফোটান বা ফোটান, তবে সেটা স্বাভাবিক। কিন্তু যদি আপনি লক্ষ্য করেন, আপনার ফোটানো ছাড়াও জাস্ট হাত-পা মুভমেন্ট করছেন, তাতেই শব্দ হচ্ছে অর্থাৎ আঙ্গুল ফোটানোর মতন শব্দ হচ্ছে হারের জয়েন্টে। তবে সেটা কিন্তু সমস্যার ইঙ্গিত। 

অর্থাৎ আপনার শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি হচ্ছে সেটা কিন্তু আপনার শরীর বুঝিয়ে দিচ্ছে। যদি সমস্যা গুলো এড়িয়ে যেতে থাকেন, তবে খুব তাড়াতাড়ি আপনি আর্থারাইটিস এর সমস্যায় পড়বেন। রিকেটস, অস্টিওপোরোসিস এবং অস্টিওপেনিয়ার পাশাপাশি বিপাকীয় হার এবং অন্যান্য শারীরিক প্রক্রিয়াগুলির স্বাভাবিক ক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটতে থাকবে আপনার অজান্তেই । 

এছাড়া দীর্ঘস্থায়ী ক্যালসিয়ামের ঘাটতির কয়েকটি লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে বুকের ব্যথা, আঙ্গুল এবং পায়ের আঙ্গুলের অসাড়তা, পেশীর সমস্যা, ভঙ্গুর নখ, শুকনো ত্বক এবং দাঁতের ক্ষয়। 

কি লক্ষ্য করেছেন এমন কিছু? যদি করে থাকেন তবে এর সমাধান আপনার ঘরেই আছে।

ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটানোর জন্য বিভিন্ন রকমের উপাদান থাকলেও দুধের উপাদান সবচেয়ে কাজের। যদি ঘরে খাঁটি দুধ থাকে তবে তো আর কথাই নেই। এছাড়াও দুধের তৈরি যেকোনো জিনিস, বিশেষ করে টকদই যদি ঘরে পাতা যায়। তবে সেটি অতি উত্তম খাদ্য বস্তু আপনার ক্যালসিয়ামের ঘাটতি মেটানোর জন্য। রোজ সকালে খালি পেটে এক টানা তিন মাস খেয়ে যান রেজাল্ট আপনার হাতে নাতে এসে যাবে।


কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় :


এন্ডোস্কোপির প্রয়োজনীয়তা, খরচ, সময় ও অন্যান্য বিষয়ে জানুন


মাথার সিটি স্ক্যান এর প্রয়োজনীয়তা


লিভার ফাংশন টেস্ট এর প্রয়োজনীয়তা, খরচ এবং অন্যান্য বিষয়


সিটি স্ক্যান এবং এমআরআই এর পার্থক্য


পি ই টি স্ক্যান করার প্রয়োজন, পদ্ধতি, খরচ, সময় এবং অন্যান্য



ভিটামিন সি (Vitamin C) এর ঘাটতির লক্ষণ


আপনি কি লক্ষ্য করেছেন যে আপনার ব্রাশের সাথে রক্ত লেগে আছে। অথবা আপনার মুখের ঘা সারছে না। কিংবা জ্বিভে ছোট ছোট ফুসকুড়ির মতো দেখা দিয়েছে। তবে কিন্তু এটা একটি লক্ষণ হতে পারে ভিটামিন সি এর অভাবের।

এর অভাবে স্কার্ভি এর লক্ষণগুলি প্রকাশ পেতে থাকে । মাড়ি ফোলা ও সহজেই রক্তপাত ঘটতে থাকে আর অবশেষে দাঁত আলগা হয়ে ওঠে। সহজেই আঘাত লাগে ও ক্ষতগুলি খুব ধীরে ধীরে নিরাময় হয়। ওজন কমে যাওয়া ও দুর্বলতা। শিশুদের মধ্যে কিছু লক্ষণগুলি দেখা যায় যেমন, অ্যানোরেক্সিয়া এবং ধীর বৃদ্ধি। শিশুদের মধ্যে হাড়ের বৃদ্ধি হ্রাস পায় এবং রক্তাল্পতা দেখা দিতে পারে। 

যদি এমন কিছু লক্ষ্য করেন তবে এখনই সতর্ক হয়ে যান এবং যোগ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। সেই ব্যবস্থা কিন্তু আপনার ঘরে থেকেই সম্ভব। বাইরের থেকে ওষুধ কেনার কোন প্রয়োজন নেই। সবচেয়ে ভালো ব্যবস্থা হলো আমলকী। এটা আপনি সারা বছরই খেতে পারেন। আর বিশেষত সমস্যা দেখা দিলে আমলকির ওপর ভরসা না করে উপায় নেই। এছাড়া আরও অন্যান্য খাদ্যগুলো রয়েছে। যেমন পেয়ারা, লেবু, ক্যাপসিকাম ইত্যাদি। এগুলি প্রত্যেকটি আপনার ভিটামিন সি এর অভাব পূরণ করতে সাহায্য করবে।


বায়োটিন (Biotin) এর ঘাটতির লক্ষণ


আপনি কি লক্ষ্য করেছেন নখের ডগা গুলি ভেঙে গেছে। অথবা নখের চারপাশ দিয়ে চামড়া উঠছে। কিংবা আপনি হয়তো লক্ষ্য করেছেন আপনার চুল আগের মত মসৃন নেই। এটা অনেকটা রুক্ষ হয়ে গেছে এবং খুব তাড়াতাড়ি পেকে ঝরে যাচ্ছে। 

যদি এই সমস্ত লক্ষণগুলি চোখে পড়ে তবে এখনই সতর্ক হয়ে যান কারন, আপনার শরীর বায়োটিনের অভাব বোধ করছে।

এছাড়াও স্নায়বিক সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন হতাশা, অলসতা ইত্যাদি। 

এই পরিস্থিতিতে শরীরকে প্রোবায়োটিক ফুড অর্থাৎ খাদ্য যোগান দিতে থাকুন। যেমন রান্না করা ডিম (বিশেষত কুসুম), বাদাম, চিনাবাদাম, আখরোট, সয়াবিন, মটরশুটি, আস্ত শস্যদানা, ফুলকপি, কলা ও মাশরুম প্রতিদিন খাওয়া শুরু করুন। এছাড়াও বিভিন্ন টক জাতীয় জিনিস, যেমন আচার জাতীয় খাদ্য বায়োটিন এর অভাব পূর্ণ করে।


জিংক (Zinc) এর ঘাটতির লক্ষণ


আপনার নখের ওপর কখনও লক্ষ্য করেছেন সাদা রংয়ের স্পট বা দাগ। কিসের জন্য হয় সেটা আগে জানুন। যদি শরীরে জিংকের ঘাটতি হয়, তবে তার চিহ্ন হিসেবে এটা নখের মাধ্যমে ফুটে ওঠে। তাই এটা যদি আপনি দেখতে পান, তবে অবশ্যই আপনার শরীরে জিংক এর ঘাটতি হচ্ছে জেনে সতর্ক হয়ে যান।

শরীরে জিংকের ঘাটতি ঘটলে বিভিন্ন রকমের সমস্যা দেখা দেয়। যেমন পুরুষের টেস্টোস্টেরন হরমোন কমতে থাকে। তার ফলে সেক্সুয়াল প্রবলেম দেখা। মুখের দাড়ি জন্মায় ধীরে ধীরে এবং সহজে পুরুষেরা ক্লান্ত হয়ে পড়েন।

অপরদিকে মহিলাদের জিংকের ঘাটতি প্রেগনেন্সির সময় সমস্যার সৃষ্টি করে ও বাচ্চার বৃদ্ধি তে বাঁধা দেয়।

আর সবার আগে মিষ্টি খাওয়া কমিয়ে দিন। কারণ যত বেশি খাবেন ততো আপনার জিংকের অভাব বাড়তে থাকবে শরীরে। তাই মিষ্টি খাওয়ার একটা সঠিক পরিমাণ নির্ধারণ করুন।

জিংকের ঘাটতি এভাবে পূরন করুন। প্রতিদিন বেশি করে বাদাম খান। সেটা বালি ভাজা বাদাম হতে পারে অথবা কাঠবাদাম হতে পারে। এতে প্রচুর পরিমাণে জিংক পেয়ে যাবেন। এছাড়াও পাবেন কাঁচা ছোলাতে। এছাড়াও প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন মুসুরির ডাল। এতে যথেষ্ট পরিমাণে জিংক রয়েছে।


কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় :











ভিটামিন বি (Vitamin B) এর অভাবে লক্ষণ


যদি লক্ষ্য করেন আপনার পায়ের তলায় ফেটে গেছে অথবা চোখের কোণে লাল হয়ে রয়েছে কিংবা মুখের ঘা সারছে না অথবা ঠোঁটের পাশে ছোট ফুসকুড়ি আকারের হয়েছে। তবে বুঝে নিতে হবে যে এই লক্ষণগুলো হলো আপনার শরীরে বি2 এর অভাব।

যদি আপনার নখের মধ্যে সাদা দাগ আড়াআড়িভাবে টানা থাকে বা দেখা যায়। তবে আপনার শরীরে ভিটামিন বি1 এর ঘাটতি হচ্ছে।

আর যদি আপনার নখ ব্রাউন অর্থাৎ বাদামী রঙের হয়ে যায়। তবে বুঝে যাবেন আপনার শরীরে ভিটামিন বি12 এর অভাব হচ্ছে।

যদি আপনার মুখে অথবা নাকের কাছাকাছি লাল রঙের আভা আসে। অর্থাৎ লাল রঙের স্পট দেখা যায়। তবে বুঝে যাবেন আপনার শরীরে ভিটামিন বি6 এর অভাব হচ্ছে।

মনে রাখবেন ভিটামিন বি এর অভাব খুব কমন একটি ফ্যাক্টর আমাদের শরীরে। আর এর অভাবে আমাদের হজমের গন্ডগোল, চুলের সমস্যা, ত্বকের সমস্যা, সহজে ক্লান্ত হয়ে যাওয়া, শরীরের ব্যথা, ডিপ্রেশনে যাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের সমস্যা সৃষ্টি হতে থাকে।

ভিটামিন বি এর অভাব পূরণ করতে পারে একমাত্র ঘরের খাদ্য অর্থাৎ প্রাকৃতিক বা ভেশজ খাদ্যগুলি। তাই বাইরের খাবার ত্যাগ করুন। যতটা পারবেন ঘরের খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন। দূরে ভ্রমণ করলে ঘরের থেকে শুকনো খাবার সাথে নিন। এতে ভিটামিন বি এর অভাব ধীরে ধীরে পূরণ হতে থাকবে আপনার শরীরে।





যদি আজকের আলোচনা (শরীরের এই লক্ষণগুলি জেনে আগে ভাগেই বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পান) থেকে আপনার কিছুমাত্র উপকার হয় তবে অবশ্যই প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমরা এখন ইউটিউবে আছি, সার্চ করুন SACHETAN JIBAN
 
এছাড়াও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতেও সচেতন জীবনকে পেয়ে যাবেন আপনার সুস্বাস্থ্য ও সচেতনতার প্রয়োজনে।

কিছু সাস্থ্যকর ও ভালো মানের প্রোডাক্ট আপনার অপেক্ষায় , এখানে ক্লিক করে দেখে নিন


বি: দ্রঃ এই লেখাটি কেবল সাস্থ্য সুরক্ষার তথ্য সরবরাহ করে মাত্র। এটি কোনওভাবেই যোগ্য চিকিৎসার মতামতের বিকল্প নয়। আরও তথ্যের জন্য সর্বদা বিশেষজ্ঞ বা আপনার নিজস্ব চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

H2