H2

তোতলামি সারানোর কিছু অসাধারণ ঘরোয়া উপায়

তোতলামি-সারানোর-কিছু-অসাধারণ-ঘরোয়া-উপায়


তোতলামি সারানোর ঘরোয়া উপায়


তোতলামি একটি স্পিচ ডিজঅর্ডার। এটি একটি জটিল দৈনন্দিন জীবনের সমস্যা। যেটি একজন মানুষের মানসিক চাপ সৃষ্টি করতে যথেষ্ট। এই সমস্যা হলে আপনি কী বলতে চান তা আপনি হয়ত জানেন তবে শব্দগুলি খুঁজে পাওয়া শক্ত। শব্দগুলি আটকে গেছে বলে মনে হতে পারে। যে কারণে আপনি বার বার শব্দগুলির পুনরাবৃত্তি করতে পারেন। চলুন আজকে জেনে নিই তোতলামি সারানোর অসাধারণ ঘরোয়া কিছু উপায় l

মনে রাখবেন তোতলামি সমস্ত বয়সের লোককে প্রভাবিত করে, তবে 2 থেকে 6 বছর বয়সের শিশুদের মধ্যে এটি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।

প্রায় 75 শতাংশ শিশু সময়ের সাথে এই তোতলা সমস্যা হারিয়ে ফেলে। বাকি 25 শতাংশ পূর্ণ বয়সে এসেও এই ব্যাধিটি অনুভব করে।
 

মূলত তিন রকমের তোতলামির সমস্যা :


ডেভেলপমেন্টাল


5 বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের মধ্যে বিশেষত পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা দেয়, তাদের বক্তৃতা এবং ভাষার দক্ষতা বিকাশের সাথে এই ধরণটি ঘটে। এটি সাধারণত চিকিত্সা ছাড়াই সমাধান হয়।

 

নিউরোজেনিক


মস্তিষ্ক এবং স্নায়ু বা পেশীগুলির মধ্যে সংকেত এর অস্বাভাবিকতা এই ধরণের সমস্যা ঘটায়।

 

সাইকোজেনিক


এই ধরণের সমস্যার উদ্ভব মস্তিষ্কের সেই অংশে যা চিন্তাভাবনা এবং যুক্তি পরিচালনা করে থাকে।

  

তোতলামির কারণ কি?


 তোতলামি রোগের একাধিক সম্ভাব্য কারণ রয়েছে, যেমনঃ

 এই রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকলে।

 শৈশবকালে বিকাশজনিত সমস্যা দেখা দিলে।

 কোন কারণে মস্তিষ্কের আঘাতের কারণে।

 মানসিক চাপ তোতলামি রোগের সৃষ্টি করতে পারে।

  

তোতলামি সারানোর অসাধারণ ঘরোয়া কিছু টিপস :


Tips 1: ধীরে ধীরে কথা বলুন


তোতলামো বন্ধের অন্যতম কার্যকর উপায় হ'ল আস্তে আস্তে কথা বলা। কোনও চিন্তাভাবনা শেষ করার সময় দিন। আপনার বক্তৃতাকে অযথা গতি প্রদান করলে শব্দটি বের করতে সমস্যা হতে পারে। কয়েকটি গভীর শ্বাস নিলে এবং আস্তে আস্তে কথা বললে কথা বলার ওপর নিয়ন্ত্রণ আনতে সহায়তা করতে পারে।

 

Tips 2: অভ্যাস


আপনার নিকটতম বন্ধু বা পরিবারের সদস্যের সাথে যোগাযোগ করুন। তারা যদি আপনাকে সময় দিতে পারে তবে সেটা অনেক বেশি সচ্ছন্দে হবে আপনার জন্য। সুরক্ষিত পরিবেশে আপনার বক্তৃতাটি অনুশীলন করা আপনাকে নিজের ওপর অনেক বেশি কনফিডেন্স এনে দেবে। আপনার বক্তৃতাটি যেভাবে শোনাচ্ছে তার সাথে আরও স্বাচ্ছন্দ্যময় করতে সহায়তা করতে পারে।

যে লোকজন তোতলামি সমস্যায় ভুগছেন তাদের সাথে একটি স্বহায়তা দলে যোগ দেওয়াও উপকারী হতে পারে। অর্থাৎ আপনি যতটা বেশি প্র্যাকটিস চালিয়ে যাবেন তত আপনার এই সমস্যা থেকে দ্রুত বেরিয়ে আসার সুবিধা হবে।

 

Tips 3: গানের সাহায্য নিন


তোতলামি রোগ থেকে মুক্ত হতে গানের সাহায্য নিতে পারেন। গান আপনাকে এই জটিল পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতে পারে খুব সহজেই। আরো বেশি জানতে এই ভিডিওটি দেখুন।



 


Tips 4 : ইংরেজি বর্ণমালার উচ্চারণ


ইংরেজি বর্ণমালার এ ই আই ও ইউ বর্ণগুলি জোরে এবং স্পষ্ট ভাবে উচ্চারণ করুন। শুরুর দিকে অনেক সমস্যা হবে। কিন্তু আবার নিঃশ্বাস নিয়ে শান্ত হয়ে বসে শুরু করুন।

এভাবে বিভিন্ন ভঙ্গিতে বলার চেষ্টা করুন। যতবার বলবেন ততবার আপনার মুখের মাংসপেশীর ওপর কাজ হবে এবং ততটাই সাবলীল হবে মাংসপেশির কাজকর্ম। এতে করে আপনার তোতলামির সমস্যা অনেকটাই ভালো হবে।

 

Tips 5: বেশি করে পড়ুন

 
পাঠ্য বই, ম্যাগাজিন বা সংবাদপত্র যাই হোক না কেন হাতের কাছে যাই পাবেন সেটাই পড়ুন। একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে পড়া চালিয়ে যান। যত বেশি পড়বেন তত বেশি আপনার এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার পথ উন্মুক্ত হতে থাকবে।

মনে রাখবেন পড়ার প্র্যাকটিস চালিয়ে যাওয়াটা সবচেয়ে বড় সুবিধা আনতে পারে আপনার এই সমস্যায়। তাই বেশি বেশি করে পড়ুন।

 

Tips 6: নাটকের দলের সাথে যুক্ত হন

 
তোতলামি সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার আরেকটি খুব ভালো এবং উন্নততর সমাধান হলো কোন যাত্রাদল বা নাটকের দলের সাথে যুক্ত হয়ে যাওয়া। এতে আপনার বেশি বেশি করে প্র্যাকটিস হতে থাকবে কথা বলার। সাথে সাথে আপনার কনফিডেন্স জাগ্রত হবে।

অর্থাৎ বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে আপনার অভিনয়ের চরিত্রের কথাবার্তা বা বৈশিষ্ট্যকে কথার মাধ্যমে প্রকাশ করার ফলে এই সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার একটি উন্নততর প্রচেষ্টা এবং উপায় হবে। তাই যত শীঘ্র সম্ভব এই ধরনের কোন গ্রুপ এর সাথে যুক্ত হয়ে যান এবং নিজের কনফিডেন্স উন্নত করুন।

 

Tips 7: যোগব্যায়াম

 
তোতলামি সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য একটি দারুন দারুণ পদ্ধতি হলো যোগব্যায়াম। যোগব্যায়াম এরমধ্যে প্রাণায়াম এবং সিংহাসন এই দুটি যোগব্যায়াম খুবই উপকারী। বিশেষ করে সিংহাসন বেশি করে লাভ দেয় তোতলামি সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য।

আপনাকে বাবু হয়ে বসতে হবে অথবা বজ্রাসনের ভঙ্গিতে বসতে হবে। দুই হাত সামনের দিকে এগিয়ে মাটিতে রাখতে হবে। মাথা ওপর দিকে করতে হবে এবং যতটা সম্ভব জিভ বাইরের দিকে বের করতে হবে।

নাক দিয়ে শ্বাস নেয়ার পরে মুখ দিয়ে জোরে আওয়াজ করে শ্বাস ছাড়তে হবে। এই পদ্ধতিতে কয়েকবার রিপিট করতে হবে তবে অধিক মাত্রায় করা প্রয়োজন নেই।

এই আসনে তোতলামি সারানোর পাশাপাশি কণ্ঠস্বরকে সুমধুর করবে। যারা গান এবং আবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত তাদের জন্য খুব সুবিধার হবে এই ব্যায়ামটি।

 

Tips 8: স্পিচ থেরাপি

 
স্পিচ থেরাপি কথা বলতে বাধা হ্রাস করতে পারে এবং আপনার আত্মমর্যাদাকে উন্নত করতে পারে। মনে রাখবেন স্পিচ থেরাপি একটি তোতলামি রোগ সারানোর চিকিৎসা পদ্ধতি। এটি একটি প্রক্রিয়া এবং কিছু সময় ধরে চলার একটি চিকিৎসা পদ্ধতি।

যেটির মাধ্যমে তোতলামি রোগ সারানো খুব সহজ। তবে মনে রাখতে হবে তোতলামি রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় যোগ্য নয়। কিন্তু এই স্পিচ থেরাপির মাধ্যমে অনেকাংশে ঠিক হয়ে যায়। স্পিচ থেরাপি চিকিৎসা কেন্দ্র আপনার লোকাল এরিয়াতে পেয়ে যাবেন।

 

মূল আলোচনা


এই সমস্যার Permanent কোনও প্রতিকার নেই, তবে এটিকে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় উপরে উল্লেখিত উপায়গুলোর মাধ্যমে। আপনার সুবিধা অনুসারে অনুশীলন এবং উপযুক্ত উপায় গ্রহণ করা সময়ের সাথে সাথে আপনার তোতলামির সমস্যা কমাতে সহায়তা করতে পারে। পরিবার এবং বন্ধুদের একটি সহায়ক নেটওয়ার্ক তৈরি করতে পারলে অনেক বেশি করে সুবিধা হবে।

সবকিছুর পরেও সমস্যা বিদ্যমান থাকলে একজন স্পিচ থেরাপিস্ট এর স্মরণাপন্ন হতে হবে।






 

আপনার মতামত জানান


যদি আজকের আলোচনা (তোতলামি সারানোর অসাধারণ ঘরোয়া কিছু উপায়) থেকে আপনার কিছুমাত্র উপকার হয় তবে অবশ্যই প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমরা এখন ইউটিউবে আছি, সার্চ করুন SACHETAN JIBAN


এছাড়াও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতেও সচেতন জীবনকে পেয়ে যাবেন আপনার সুস্বাস্থ্য ও সচেতনতার প্রয়োজনে। সুস্থ থাকুন, সচেতন থাকুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

H2