H2

এসোফ্যাজাইটিস (Esophagitis) বা খাদ্যনালীর সংক্রমণ থেকে মুক্তির উপায় কি ?



এসোফ্যাজাইটিস-বা-খাদ্যনালীর-সংক্রমণ



এসোফ্যাজাইটিস বা খাদ্যনালীর সংক্রমণ


খাদ্যনালীর প্রদাহ বা জ্বালা কে বলা হয় এসোফ্যাজাইটিস বা খাদ্যনালীর সংক্রমণ। খাদ্যনালী হল এমন একটি অঙ্গ যা আপনার মুখ থেকে আপনার পেটে খাবার পাঠাতে সাহায্য করে থাকে। এই খাদ্যনালীতে জখন তৈরি হয় সংক্রমণপ্রদাহ বা ঘা তখন আমাদের পেটে ব্যাথা, বুক জ্বালা, গলায় ব্যাথা বা খাওয়ার সময় গিলতে অসুবিধা হতে থাকে।

হঠাৎ করেই আমাদের খাওয়া গিলতে গেলে অসুবিধা হয় বা গলা বুক জ্বলতে থাকলে আমরা প্রাথমিকভাবে কিছু বুঝতে পারি না, তাই আমরা ছুটে যাই ডাক্তারের কাছে।

খুব সাধারণ কিছু কারণগুলি রয়েছে এই রোগটি হওয়ার জন্য, যেমন, অ্যাসিড রিফ্লাক্স, কিছু ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া এবং ব্যাকটিরিয়া বা ভাইরাল সংক্রমণ ইত্যাদি।

সঠিক সময়ে চিকিত্সা না করা হলে খাদ্যনালীতে আলসার, দাগ এবং এ্যাসোফাগাসের গুরুতর সংকীর্ণতা দেখা দেয় যা গুরুতর শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এমনকি চিকিৎসার অভাবে ক্যান্সার পর্যন্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই এই গুরুতর রোগকে কোন ভাবে এড়িয়ে যাওয়া উচিত নয়।

এসোফ্যাজাইটিস লক্ষণ  (Symptoms) :


এই ভয়ঙ্কর রোগটিতে সঠিক সময়ে চিকিৎসা গ্রহণ না করলে বিশেষ ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু কি দেখে বুঝব যে এই রোগের প্রভাব তৈরি হচ্ছে শরীরে। তাই আসুন জেনে নিই চটপট কি কি Symptoms বা লক্ষণ গুলি রয়েছে যা দেখে আমরা বুঝতে পারি এই রোগটি আমাদের শরীরে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে।

গিলে খেতে সমস্যা

গলা ব্যথা

কর্কশ কন্ঠ

অম্বল

এসিড রিফ্লাক্স

বুকে ব্যথা (খাওয়ার সাথে তৈরি হয়)

বমি বমি ভাব

এপিগাস্ট্রিক পেইন বা পেটে ব্যথা

ক্ষুধা হ্রাস বা কমে যাওয়া

কাশি

উপরে বলা লক্ষন গুলি দেখলে বা এই ধরনের শারীরিক সমস্যা অনুভব করলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত কারণ এগুলি যথার্থ লক্ষণ হতে পারে এসোফ্যাজাইটিস, খাদ্যনালীর সংক্রমণ বা কণ্ঠনালীর গুরুতর সমস্যার জন্য।



কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় :

খাদ্যনালীর সংক্রমণ পরীক্ষা (Diagnosis) :


আপনার এসোফ্যাজাইটিস বা খাদ্যনালীর সংক্রমণ হওয়ার লক্ষণগুলি দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে দেখা করার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট করুন। অন্য কোনও রোগ থেকে থাকলে তার সম্পূর্ণ চিকিত্সার ইতিহাস সরবরাহ করার জন্য প্রস্তুত থাকুন। আপনার পুরনো প্রেসক্রিপশন এবং অন্যান্য ডকুমেন্টস থাকলে সেগুলো ডাক্তারকে দেখান।

আপনার ডাক্তার সম্ভবত শারীরিক পরীক্ষা করবেন। কিছু ডায়াগনস্টিক পরীক্ষারও আদেশ দিতে পারেন, যেমন বায়োপসি সহ এন্ডোস্কোপি বা বেরিয়াম এক্স-রে ইত্যাদি। এছাড়া অন্যান্য পরীক্ষা রয়েছে, তবে এই দুটি পরীক্ষাই মূলত এই ধরনের সমস্যার ক্ষেত্রে করতে দেওয়া হয়ে থাকে।

তবে এদের মধ্যে এন্ডোস্কোপি খুবই কার্যকরী একটি পরীক্ষা। যেটির মাধ্যমে কণ্ঠনালীর প্রকৃত অবস্থা কি সেটা খুব স্পষ্টভাবে দেখা যায় এবং জানা যায়। তৎসহ চিকিৎসা পদ্ধতিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব হয়। এই পরীক্ষাটি চলাকালীন প্রয়োজনে বায়োপসি করেও দেখা হতে পারে যে পরিস্থিতি কতটা গুরুতর।

উচিৎ ও অনুচিৎ  (Do & Don't) :


সমস্যাটি দেখা দিলে কিছু খাদ্য থেকে বিরতি নেওয়া উচিত বা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলা উচিত, যেমন -

মশলাদার খাবার, অম্লীয় খাবার, এবং কাঁচা বা শক্ত খাবার ইত্যাদি খাদ্য এড়িয়েও আপনি আপনার অসুবিধা থেকে কিছুটা হলেও বেরিয়ে আসতে পারেন।

খাবার গ্রহণ করার সময় সর্বদা খেয়াল রাখুন কিছু কিছু বিষয় যেমন, ছোট ছোট কামড় নিন এবং খাবারটি ভালভাবে চিবান। আপনার ডাক্তারকে ডায়েটরি গাইডলেন্সের জন্য জিজ্ঞাসা করুন অর্থাৎ এই কঠিন পরিস্থিতিতে আপনি কি খাবেন এবং কি কি এড়িয়ে চলবেন সেই সম্বন্ধে বিস্তারিত জেনে নিন আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে।

তামাক এবং অ্যালকোহল জাতীয় নেশাদ্রব্য এড়ানো উচিত। কারণ এই রোগের প্রভাবে আপনার কন্ঠ নালী এমনিতেই ভীষণ ভাবে দুর্বল থাকে। তাই এই ধরনের নেশা দ্রব্য গুলি ভীষণভাবে ক্ষতি করে আহত কণ্ঠনালীকে।

যেহেতু খাদ্যনালী খুব বেশি সংকীর্ণ হয়ে যায় এবং খাদ্য প্রবেশের বাঁধার কারণ হয়ে থাকে তাই যতটা সম্ভব তরল এবং নরম খাদ্য খাওয়া উচিৎ। শক্ত এবং বড় আকারের খাদ্য আপনার কণ্ঠনালীকে খুব বেশি করে আঘাতপ্রাপ্ত করে এবং এই রোগটিকে আরো দীর্ঘ দিনের জন্য শরীরে থেকে যেতে বাধ্য করে।

মনে রাখবেন শুরুর দিকে খুব সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রহণ করলেই রোগটি সেরে যায় আর যদি আপনার ইমিউনিটি পাওয়ার শক্তিশালী থাকে তাহলে তো খুব অল্প দিনেই আপনি এই সমস্যা থেকে সুস্থতার দিকে এগিয়ে যাবেন। কিন্তু কোনভাবেই একে দীর্ঘদিন ফেলে রাখবেন না।

দীর্ঘদিন চিকিৎসার অভাবে খাদ্যনালী খুব মারাত্মকভাবে সংকুচিত হয়ে যেতে পারে এবং এর টিশু গুলি ভীষণ ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। এমনকি ভবিষ্যতে ক্যান্সারের আশঙ্কা থেকে যায়। কারণ দীর্ঘস্থায়ী অ্যাসিডের সংস্পর্শের কারণে খাদ্যনালীর কোষগুলি খুব দ্রুত পরিবর্তিত হতে থাকে।

আর দীর্ঘদিনের পরিবর্তনের ফলে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসার জন্য ব্যবস্থা নিন।








যদি আজকের আলোচনা থেকে আপনার কিছুমাত্র উপকার হয় তবে অবশ্যই প্রিয়জনদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আমরা এখন ইউটিউবে আছি, সার্চ করুন SACHETAN JIBAN

এছাড়াও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়াতেও সচেতন জীবনকে পেয়ে যাবেন আপনার সুস্বাস্থ্য ও সচেতনতার প্রয়োজনে। সুস্থ থাকুন, সচেতন থাকুন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

H2